Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভাষা ও সংষ্কৃতি

 

পদ্মা, চন্দনা,  গড়াই বিধৌত  পলল  উর্বর মৃত্তিকায় গঠিত পাংশা ।  উর্বর মৃত্তিকা যেমন পাংশাকে করেছে সুজলা সুফলা তেমনি এর প্রভাব রয়েছে  মানুষের মন ও মননে। পাংশা  ঐতিহাসিক ভাবে  প্রাচীন বঙ্গ সমতট ভুক্ত। বঙ্গের মানুষ  ঐতিহ্যগত ভাবে কৃষি নির্ভর এবং  সহজ সরল  জীবন যাপনে অভ্যস্ত। পাংশা উপজেলার অধিবাসীগন এর ব্যতিক্রম নন। অত্র উপজেলার অধিবাসীগন অত্যন্ত অতিথি পরায়ন ও আমোদপ্রিয়।

 

পাংশা উপজেলায় পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া, মাগুরা, পাবনা ও দেশের অন্যান্য স্থানের অধিক সংখ্যক মানুষ এখানে অভিবাসিত হয়েছেন। পাশাপাশি  পাংশা উপজেলায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। অভিবাসিত জনগোষ্ঠী,নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ও মুল জনগোস্ঠীর এক অনিন্দ্য আনন্দ মিলনস্থল  পাংশা উপজেলা। এখানে সকলে মিলে মিশে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ । সকল সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ এক অন্যের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে আন্তরিকতার সাথে অংশগ্রহন করে থাকেন। গ্রাম্য মেলা, সার্কাস, সাপের খেলা, নাগর দোলা, পুতুল নাচ, পালা গান, লাঠি খেলা, নৌকা বাইচ, পুনাহ, নববর্ষ, হাল-খাতা, মহররম, দূর্গা পূজা, বুদ্ধপূর্ণিমা, বিবাহ, খাৎনা, খাদ্য আনুষ্ঠানিকতা, ঈদ উৎসব এসব জাঁক জমকের সাথে পালন করা হয়। এর মধ্যে মেলা, পার্বন, মহররম,ঈদ, বিবাহ, খাৎনা প্রধান উৎসব হিসাবে পালন করা হয়।

 

 বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে চাউলের রুটির সাথে মুরগীর গোস্ত, সাথে চিতাই পিঠা, ধুপি পিঠা, কুশলীপিঠা  পরিবেশন এ অঞ্চলের মানুষের স্বকীয় বৈশিষ্টমন্ডিত। ইলিশ, কৈ, মাগুর, শোল, বোয়াল এসব গ্রামীণ মানুষের প্রিয় খাবার। পাংশার চমচম,চানাচুর ও দধির খ্যাতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় পাংশার মানুষের ভাষায় বিশেষত্ব রয়েছে। পাংশায় রাজবাড়ীর আঞ্চলিক বাংলা ভাষার ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। যা প্রায় বাংলা সাধু ভাষার কাছাকাছি। কথ্য রীতিতে কেমন করে - ক্যাম্বা, যেমনকে - য্যাম্বা, খাওয়াকে - খাবানে , যাওয়াকে – যাবানে বলা হয়ে থাকে।পাবনার প্রভাবিত অনেকে ‘‘স’’ এর স্থলে ‘‘হ’’ উচ্চারণ করে । যেমন সব- হব, সুঁইকে হুই, সন্ধাকে হন্দে বলে থাকেন।

 

সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে পাংশার অবদানও অনস্বীকার্য ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন ,কাজী আব্দুল ওদুদ, এয়াকুব আলী চৌধুরী ,রোকনুজ্জামান দাদাভাই কাজী আনোয়ার হোসেন, মোঃ রওশন আলী চৌধুরী প্রমুখ এদেশের সাহিত্যাঙ্গনকে করেছেন যেমন সমৃদ্ধ তেমনিড: সানজীদা খাতুন,  ফাহমিদা খাতুন সঙ্গীতাঙ্গনকে করেছেন সমৃদ্ধ। পাশাপাশি  চিত্র জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন চিত্র নায়িকা শাবনুর। প্রবাদ প্রতিম মূকাভিনেতা পার্থ প্রতিম মজুমদার পাংশার কৃতী সন্তান।

 

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায়  পাংশায় আদিবাসীদের বসবাস আছে। এই নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠী আদিবাসীদের মধ্যে  বুনো, বিন্দি, বেহারা, বাগদী, কোল বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য।আদিবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন গোত্র আছে। যেমন- কুর্মিমাহাতো ভূমিজ (লামিছ), মুন্ড, লাহোড় (কর্মকার), বাগদী, রাজোয়ার, ঘাসি, গঞ্জ, মালহি বা মালি, সিং, রাং। তনেমধ্যে কৃর্মি মাহাতো, বাগদী, রাজোয়ার, ঘাসি, মালি, সিং, রায় এই সাত গোত্রের আদিবাসী পাংশা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বসবাস করে। এখানে আদিবাসীদের পূর্ব পুরম্নষদের আগমন  ভারতের বর্ধমান জেলাসহ ভারত বর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলথেকে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের স্থায়ী ভাবে বসবাস করছে।